Header Ads

বিসিএস টিপস, অলসদের জন্য:


বিসিএস টিপস, অলসদের জন্য:
পর্ব : লাইফস্টাইল
আপনি যদি সিরিয়াস, কর্মঠ ভালো ছাত্র হয়ে থাকেন তাহলে এই লেখা আপনার জন্য নয়। কিন্তু আপনি যদি আমার মতো অলস, আকাইম্যা, ঘুমকাতুরে, ব্যর্থ, সাপ্লিখাওয়া ব্যাকবেঞ্চার হয়ে থাকেন তাহলে এই পরামর্শ গুলো আপনার বিসিএস পরীক্ষার জন্য কাজে লাগবে।
. প্রথমেই কোচিং করার পরিকল্পনা বাদ দেন। আপনি যেহেতু অলস তাই জ্যাম ঠেলে কোচিং যাওয়া আসা, ক্লাস করা এসব আপনার পোষাবে না। তার চেয়ে বরং যে সময়টা রাস্তায় কাটাতেন সেই সময়টা ঘুমিয়ে কাটান। আর ক্লাসের সময়টা বাসায় বসে একটু পড়েন।
. কোন স্ট্রিক্ট রুটিন করার দরকার নাই। কারন অলস মানুষ হিসেবে আপনি দেরিতে ঘুম থেকে উঠেন। নাস্তা খান দুপুরে, ভাত খান বিকালে। আপনার কোন কিছুরই ঠিক ঠিকানা নাই। তাই স্পেসিফিক রুটিন করলে ফলো করতে পারবেন না। ব্যর্থ হবেন। তাতে মন খারাপ হবে। হতাশা আসবে।
. পড়ায় সিরিয়াস হতে যেয়ে বিনোদন মূলক কাজকর্ম থেকে দূরে থাকবেন না। তাহলে মানসিক চাপ বাড়বে। বাংলাদেশের খেলা মিস দেওয়া যাবে না। বিকালে আপনার মতো আকাইম্যা বন্ধুদের সাথে আড্ডা দিবেন। একটু ঘুরাঘুরি করবেন।হাওয়া বদল’, ‘আশ্চর্য প্রদীপ’, ‘ভুতের ভবিষ্যতবাআয়নাবাজিমতো বিনোদনমূলক চলচ্চিত্রগুলো দেখবেন। তবে হিন্দি সিরিয়াল দেখবেন না। মাথা নষ্ট হয়ে যাবে।
. পরীক্ষায় পাস করতে হবে এই চিন্তা বাদ দেন। আপনি সাপ্লিখাওয়া স্টুডেন্ট। ব্যর্থতা আপনার নিত্য সংগী। তাই পাস করতেই হবে এই চিন্তা করে মনের উপর চাপ বাড়ানোর দরকার নাই। ফুরফুরে থাকেন, নিজের মতো পড়েন। তারপর পাস করে গেলে লোকজন বলবেপোলাডা যে জিনিয়াস এইডা কিন্তু আমি আগেই জানতাম
. আপনার বাসার লোকজন যেমন আব্বা, আম্মা, ভাইবোন সবাই আপনাকে বলবেওমুক বাড়ির আক্কাস মিয়ার পোলা মুকলেস জীবনে কত কিছু কইরা ফেলাইলো, তুই ঘুমাইয়া ঘুমাইয়া জীবনটা শেষ কইরা দিলি এসব কথা শুনার সাথে সাথে বইটা বন্ধ করে মনে মনে ভাববেন আপনি মুকলেস না। আপনি হচ্ছেন আপনি। আপনি বেশি ঘুমান মানে আপনি বেশি এনার্জেটিক। তাই সফলতার পিছনে না দৌইড়া নিজের উপর বিশ্বাস রাখেন। আর পরীক্ষার আগের ছয় মাস থেকে আত্মীয়স্বজন থেকে দূরে থাকেন।
আজ এই পর্যন্তই। পড়াশোনা কিভাবে করবেন সেটা আরেকদিন বলবো। তবে সেই কৌশলটাও হবে ঘুমের মতো আনন্দদায়ক।
বিসিএস টিপস, অলসদের জন্য:
পর্ব : শুরুটা করবেন কিভাবে?
আমাদের মত অলসদের প্রধান সমস্যা কোন কাজ শুরু করা। আমরা অনেক অনেক পরিকল্পনা করি। তারপর ভাবি ঘুম থেকে উঠেই কাজ শুরু করবো। তারপর ঘুমিয়ে ঘুমিয়ে টায়ার্ড হয়ে আবার ঘুমিয়ে রেস্ট নেই। তাই আজকের প্রধান আলোচনা কিভাবে পড়া শুরু করবেন। প্রথমেই বলে নেই আমি আপনাকে পড়ার টেকনিক শেখাবো না। সেটা সম্ভবও না। সবারই নিজস্ব টেকনিক আছে। আমি শুধু আপনাকে কয়েকটা কাজের কথা বলবো যেগুলো করলে আপনি বিভিন্ন ঝামেলা থেকে বেঁচে যাবেন।
. আপনি নিশ্চয়ই বিভিন্ন সাজেশন, বড় ভাইয়ের হ্যান্ড নোট, বিভিন্ন কোচিং সেন্টারের লেকচার শিট, পেপারকাটিং এসব জোগার করে ফেলেছেন? এগুলো খুবই গুরুত্বপূর্ন। সবগুলোকে একটা বস্তায় ভরুন। তারপর ফেরিওয়ালার কাছে বিক্রি করে সেই টাকায় আইসিক্রম খান।
. প্রফেসর, ওরাকল, এমপিথ্রি, এস্যুরেন্স ইত্যাদি বিভিন্ন প্রকাশনীর বই একসেট করে এবং ডাইজেস্ট, এসএসসি এইচএসসি বোর্ডের বই, হুমায়ুন আজাদের লাল নীল দীপাবলী এসব কেনা হইছে? হয় নাই? কন কি? তাড়াতাড়ি যান। তারপর দোকানে যেয়ে সবগুলা নাম মাথা থেকে ঝেড়ে ফেলে দেন। মনে রাখবেন আপনি অলস কিন্তু আঁতেল না। তারপর বেছে বেছে প্রতি সবাজেক্টের যেই বইটা আপনার কাছে সহজ লাগে সেটা কিনেন। কঠিন বই পড়ার কোন অতিরিক্ত সুবিধা নাই। আর যদি ইতিমধ্যে সবধরনের বইয়ের পাহাড় জমানো হয়ে যায় তাহলে দরকারী গুলো বাছাই করেন। আর বাকিগুলা আগের মতো বস্তায় ভরে বিক্রি করে সেই টাকায় কটকটি খান। মোটামোটা দুই একটা বই আলাদা রাখেন। কেন পরে বলতেছি।
. এতক্ষনে নিশ্চই জ্ঞানীগুনীরা আপনারে পরামর্শ দেওয়া শুরু করছে যে বিসিএস চান্স পেতে হলে ১২-১৩ ঘন্টা পড়াশোনা করতে হয়। কেউ কেউ নাকি ১৫ ঘন্টাও পড়ে। এইরকম পরামর্শ দিতে আসলে আগে সরাইয়া রাখা মোটা বইগুলা থেকে একটা তুলে তার মাথায় বাড়ি মারেন। কারন সে চাপাবাজ। হয় সে কখনোই বিসিএসে পাস করে নাই আর না হয় আপনাকে নার্ভাস করাই তার উদ্দেশ্যে।
. এখন কয়ঘন্টা পড়বেন? শুরুর ৫দিন কোন পড়াশোনার দরকার নাই। ঘুম, বিনোদন, খাওয়া দাওয়ার পর যে সময় পাবেন তা থেকে একঘন্টা সময় বের করে বইগুলো একটু ঘাটাঘাটি করুন। প্রতিটা পাতা উল্টিয়ে উল্টিয়ে দেখুন। কোন কিছু মুখস্ত করবেন না। শুধু টপিকগুলোর উপর চোখ বুলান। ২৪ ঘন্টায় মাত্র একঘন্টা সময় দিচ্ছেন, তাই সাবধান এই একঘন্টায়, নো মোবাইল, নো ফেসবুক, নো টিভি, নো আইপিএল, নো সানিলিওন, নো ফুশুর ফুশুর উইথ গার্লফ্রেন্ড/বয়ফ্রেন্ড। এই একঘন্টা শুধু অখন্ড মনযোগ।
. প্রথম পাঁচ দিনের পর দ্বিতীয় পাঁচ দিন দুইঘন্টা করে পড়বেন। এর মাঝে প্রতি আধাঘন্টায় মিনিট বিরতি দিবেন। তবে উঠবেন না। তার পরের পাঁচদিন তিন ঘন্টা। এভাবে ২৫ দিন পর আপনি দৈনিক ঘন্টা পড়াশোনার একটা রুটিনে পৌছবেন। তারপর আর বাড়নোর দরকার নাই। পরীক্ষার একমাস আগে পর্যন্ত আপনি এই ঘন্টার রুটিন চালিয়ে যাবেন। তবে এই ছয় ঘন্টা একটানা করার দরকার নাই। দুইঘন্টা পর পর ব্রেক নিবেন। অথবা সকালে তিনঘন্টা রাতে তিনঘন্টা এভাবেও পড়তে পারেন সেটা আপনার ইচ্ছা। কিন্তু যেভাবেই হোক দিনে ছয় ঘন্টা পড়তে হবে। ঘন্টার কোটা পুরন হওয়ার পর আপনি স্বাধীন। তারপর ফেসবুক, ক্রিকেট, সানিলিওন, দীপিকা, শাকিব, অপু সব চালাতে পারবেন। (চলবে)
ডা: কামরুল হাসান রাহাত
বিডিএস (ঢাকা ডেন্টাল কলেজ)
ওরাল এন্ড ডেন্টাল সার্জন
৩৫ তম বিসিএস (স্বাস্থ্য)


No comments

Powered by Blogger.